বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরের বছর, ১৯৭২ সালে গঠন হয়েছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। দুই বছর পর ১৯৭৪ সালে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) সদস্য হয় বাংলাদেশ এবং ফিফার সদস্য পদ পায় আরো দুই বছর পর ১৯৭৬ সালে। ১৯৯৭ সালে আঞ্চলিক সংস্থা সাউথ এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন (সাফ) গঠিত হওয়ার শুরু থেকেই বাংলাদেশ সদস্য।
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের বয়স ৪৮ বছর। তবে ইদানিং প্রথম ৩৬ বছরের চেয়ে বেশি আলোচনায় সর্বশেষ ১২ বছর। অনেকে রসিকতা করে বলেন-ফুটবল ফেডারেশনের জন্ম কি ২০০৮ সালে?
সর্বশেষ ১২ বছর বেশি আলোচনায় আসার আছে বহু কারণে। যার তিনটি প্রধান কারণ হলো- এক. সর্বশেষ এক যুগ ধরে বাফুফের সভাপতি দেশের সর্বকালের সেরা ফুটবলার কাজী মো. সালাউদ্দিন। দুই. এই এক যুগে ফিফা র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশ পিছিয়েছে এবং তিন. এই এক যুগে ৬টি সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ হয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশ একবার শুধু সেমিফাইনাল খেলেছে। বাকি ৫ বার বিদায় নিয়েছে গ্রুপপর্ব থেকে। এ সময়ে ৪টি বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক ফুটবল হলেও বাংলাদেশ মাত্র একবার ফাইনাল খেলেছে।
বাফুফে সভাপতি হিসেবে কাজী মো. সালাউদ্দিন দায়িত্ব নিয়েছেন ২০০৮ সালের ২৮ এপ্রিল। তিনি দায়িত্ব নেয়ার ১৯ দিন আগে ঘোষিত ফিফা র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৮০। গত ১১ জুন ঘোষিত সর্বশেষ র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ১৮৭ নম্বরে। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে মে-এই চার মাস ১৯৭ নম্বরে ছিল বাংলাদেশ। সর্বশেষ র্যাংকিংয়ের হিসেবে কাজী মো. সালাউদ্দিনের সভাপতিত্বের এই ১২ বছরে বাংলাদেশ পিছিয়েছে ৭ ধাপ। ফিফা র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ অবস্থান ছিল ১১০। ১৯৯৬ সালের ২৪ এপ্রিল ঘোষিত র্যাংকিংয়ের ওই ১১০ নম্বরটি এখন বাংলাদেশ ফুটবলের ইতিহাস। তখন ফিফার সদস্য ছিল ১৮১ টি দেশ।
১৯৯৬ সাল থেকে ২০২০, পাক্কা দুই যুগ। এই দুই যুগে ফিফা র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের ফুটবল পিছিয়েছে ৭৭ ধাপ। যার মধ্যে ৭০ ধাপই পিছিয়েছে কাজী মো. সালাউদ্দিন সভাপতির দায়িত্ব নেয়ার আগের এক যুগে। ১৮০ থেকে কাজী সালাউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন কমিটি ১২ বছরে র্যাংকিং নামিয়েছে ১৮৭ তে।
১৯৯৬ থেকে ২০০৮-এই ১২ বছরে ফিফা র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের ভয়াবহ ভরাডুবি হলেও ওই সময়ে জাতীয় ফুটবল দলের কয়েকটি সাফল্য অবশ্য ছিল। যেমন- ১৯৯৯ সালে সাফ গেমসে (বতর্মানে এসএ গেমস) প্রথম স্বর্ণ জয়, ২০০৩ সালে প্রথম সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয় এবং ২০০৫ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সর্বশেষ ফাইনাল খেলে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা।
Leave a Reply